Faijus Salehin Bhuiyan

Faijus Salehin Bhuiyan

বীরপুরুষ

লেজ উঁচিয়ে মনিবের গা ঘেঁষে মিউমিউ স্বরে ডাকলে বেঁচে থাকা যায় এখানে নির্বিঘ্নে। তোকে কে বলেছিলো বাঘ হতে সোনা? জানি, তুই বিশ্বাস করতি মনেপ্রাণে – ” বিড়ালের মতোন হাজার বছর বেঁচে থাকার চেয়ে বাঘের মতোন একদিন বেঁচে থাকাই শ্রেয়।”

বিবেক ও অসুর

বিপথে পা ফেললেই পেছন থেকে জামাটায় খামচে ধরে বিবেক মশাই। শুঁকে বেড়ায় বৈধ অবৈধের ঘ্রাণ উপার্জিত অর্থে, অনৈতিক কামাগ্নিতে ঢেলে দেয় শীতল জল, অনুশোচনার চুল্লীতে আগুন জ্বেলে দগ্ধ করে অহর্নিশি, ইঁদুরের মতো কেটেকুটে করে নাশ বুননকৃত প্রতারণার জাল। তাই বুঝি…

প্রজাপতি হবো একদিন

এই যে পড়ে আছি গুটির ভেতরে শুঁয়োপোকা হয়ে শুধুমাত্র একদিন প্রজাপতি হবো বলে। রঙিন ডানা মেলে উড়ে বেড়াবো সেদিন ক্লান্তিহীন ঘুরে বেড়াবো নন্দন কাননে সত্তুর প্রজাতির ফুলে। প্রজাপতির বর্ণিল ডানায় বিমুগ্ধ হয়ে কে আর জানতে চায় বলো শুঁয়োপোকার ইতিহাস!

একটি মহীরুহ এবং প্রলম্বিত ছায়া

তীব্র খরতাপের এইসব দিনগুলোতে আগলে রাখতো গভীর মমতায় প্রকাণ্ড এক মহীরুহের প্রলম্বিত ছায়া। সেই মহীরুহ এখন করেছে বর্ধন স্বর্গোদ্যানের শোভা। তবুও ওষ্ঠাগত প্রাণ মিছেই খুঁজেফিরে প্রলম্বিত সেই ছায়া। যেই চাঁদ হারিয়ে যায় অমাবস্যায়,সেই চাঁদই ফিরে আসে ভরা পূর্ণিমায়; গোধূলিলগ্নে ডুবে…

দৃষ্টান্ত

কা কা স্বরে কেবল কাকেরাই বুঝি কন্ঠ মেলায় একতার কোরাস গানে পুঁতময় হিংসা বিদ্বেষেই কাকের যতো অরুচি,ছুটে না স্বার্থান্বেষী টানে। পিঁপড়াগুলো সারিবদ্ধভাবে চলে, কোন তন্ত্রমন্ত্রের বলে? অপশক্তির কুঠারাঘাতেও ধরে না চিড় শৃঙ্খলার শৃঙ্খলে। যদিও নেই সংবিধান তবুও কতোটা নিয়মতান্ত্রিক মৌমাছির…

জ্বর

গতরের নদীতে যদি প্রবাহিত হয় অকুণ্ঠ উত্তাপ জেগে ওঠে,কাচঘরে বন্দী সৌম্য পারদের নদী; প্রিয়ার দরদের নদীটায়ও ফুলেফেঁপে উঠে জলোচ্ছ্বাস। গতর,পারদ আর দরদের ত্রিমোহনায়-অদ্ভুত প্রেমের বুদ্বুদ! দফায় দফায় জলপটি,পারদের নদীতে নামে ভাটা প্রিয়ার দরদের নদীটাও বুঝি সেই পথেই দিবে হাঁটা!

পাহারা দেয়া চাঁদ

ছেলেবেলায় নৈশকালীন বাস ভ্রমণে বাসের সাথেসাথে চাঁদের ছুটে চলা দেখে বিস্ময়ে কপালে উঠতো দু’চোখ। বাবাকে জিজ্ঞেস করতেই আদুরে কণ্ঠে বলতেন- ” চাঁদ তোমাকে পাহারা দেয় বাবা!” ছোট্ট সেই মগজে কথাগুলো গেঁথে গেলেও বড়বেলায় এসে বেশ ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম বাবাই…

দুঃখবিলাসী

সুদিনের পানপাত্রে কেন ঢেলে দাও বিষাদের তেতো গরল? উচ্ছসিত ফোয়ারা পায়ে ঠেলে খুঁজে ফিরো লবনাক্ত তরল উড়ে বেড়াও শূন্যতার নীলে,মেলে অভিমানী ডানা অথচ জমিন সবুজাভ এলাচ কতো কতো সুগন্ধি দানা! হাতছানিতে ডাকে খোলা আকাশের নীচে বৃক্ষ জীবনের রোশনাই কেন হতে…

গর্জে উঠুক পুনর্বার

কেন লাউডগা সাপের মতো ভুগছো অহেতুক হীনমন্যতায় মগজে বাসা বাঁধা ঝাঁকেঝাঁকে হতাশাপোকা মাংসাশী ব্যাকটেরিয়ার মতো খুবলে খাচ্ছে যাবতীয় আত্মবিশ্বাস। উনুনের গার্হস্থ্য উত্তাপে বিশুদ্ধ হয়ে উঠুক বিগড়ে যাওয়া যত নিউরন হতাশাগুলো বাষ্প হয়ে মেঘেদের খাঁজে করুক আত্মগোপন ঝকঝকে আত্মবিশ্বাস নিয়ে বুকে,গর্জে…

কোরবানি

কথিত আছে কাছের বন্ধুকে ধার দিতে নেই, তাতে সম্পর্ক নষ্ট হয়।একথাটি কখনোই মানতে রাজি ছিলো না শোয়েব।কাছের বন্ধু টাকার অভাবে বিপদে পতিত হবে অথচ নিজের কাছে টাকা থাকা সত্বেও টাকা ধার দেয়া যাবে না,বন্ধুত্ব নষ্ট হবার অজুহাতে! এটা কেমন কথা?…